Agamemnon [আগামেমনন] নাটকটি রচনা করেন প্রাচীন গ্রীক নাট্যকার এস্কাইলাস বা ইস্কিলুস [Aeschylus]. তিনি প্রাচীনতম তিনজন গ্রিক ট্র্যাজেডি রচয়িতাদের মধ্যে একজন, যাদের লেখা সম্পূর্ণ হারিয়ে যায়নি। অন্য দুইজন হলেন সফোক্লিস এবং ইউরিপিডিস। আগামেমনন হলো মহা ট্র্যাজিক ট্রিলজি, ওরেস্টিয়ার প্রথম নাটক। এস্কাইলাস আনুমানিক খ্রীষ্টপূর্ব ৪৫৮ সালে Oresteia লিখেছেন। এটি হচ্ছে তার বেচে থাকা একমাত্র ট্রিলজি। এই ট্রিলজির অন্য দুটি নাটক হচ্ছে Choephori [চয়েফরি] এবং Eumenides [ইউম্যানাইডস]।

 এই নাটকটি গ্রিসের আরগোস-এ রাজা আগামেমননের প্রাসাদে হয়েছিল।আরগোস [Argos] হলো একটি পর্বত উপদ্বীপের একটি শহর, পেলোপনিস, এটি দক্ষিণ গ্রীসকে তৈরি করে। উপদ্বীপটি করিন্থ উপসাগরের দক্ষিণে এবং ভূমধ্যসাগরের উত্তরে অবস্থিত। আরগোস উপদ্বীপের উত্তর-পূর্ব অংশে অবস্থিত।আরগোসের নাগরিকদের আর্জিভ [Argives] বলা হত।


Agamemnon Summary in Bangla
Agamemnon Summary in Bangla


Agamemnon Characters in Bangla:


Agamemnon: আগামেমনন আরগোসের রাজা, গ্রীক বাহিনীর প্রধান ও মেনেলাউস -Menelaus এর ভাই। 

Clytemnestra: ক্লাইটেমনেস্ট্রা রাজা আগামেমননের স্ত্রী ও তাঁর অনুপস্থিতিতে সে রাজ্য শাষন করেছে।

Iphigenia:  ইফিজেনিয়া হলো আগামেমনন ও ক্লাইটেমনেস্ট্রার মেয়ে।

Cassandra: কাসান্দ্রা ট্রয়ের রাজা প্রায়ামের কন্যা। ট্রয় এর পতনের পরে রাজা আগামেমনন তাকে সাথে করে নিয়ে আসে।

Aegisthus: এজিসথাস রাজা আগামেমননের চাচাতো ভাই ও রানী ক্লাইটেমনেস্ট্রার প্রেমিক। আগামেমননের পিতা এজিসথাসের ভাইকে হত্যা করে কেটে রান্না করে তার পিতা থাইয়েসটিসকে [Thyestes] খাইয়েছিল।

Chorus:  কোরাস আরগোসের বৃদ্ধরাই এই নাটকে কোরাসের ভূমিকা পালন করে। তারা ছিল খুবই দূর্বল তাই তারা যুদ্ধে যায়নি বরং রানী ক্লাইটেমনেস্ট্রাকে সাহায্য করত।

The watchman:  প্রহরী, তাকে প্রাসাদের ছাদে বসে থাকার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তাঁর কাজ ছিল সতর্ক নজর রাখা, কখন ট্রয়ের পতনের পর দূরে আলোর সঙ্কেত দেখা যাবে।

The Herald:  সংবাদ বাহক সে কোরাসদেরকে আগামেমননের নিরাপদে বাড়িতে ফিরে আসার সংবাদ শোনায়। সে তাদেরকে যুদ্ধের ভয়ংকর কাহিনিগুলো শোনায়।


Agamemnon Summary in Bangla:


আগামেমনন নাটকটির শুরুতে আরগোসের (Argos) প্রাসাদের ছাদে প্রহরীকে পাহারারত অবস্থায় দেখা যায়। কখন ট্রয় নগরী গ্রীকদের হাতে পরাস্ত হবে তাঁর সঙ্কেত পাওয়ার জন্যে সে অধীরভাবে অপেক্ষা করছিল। বহূ দূরে একটি আলোক-সঙ্কেত এর ঝলকানি [beacon] দেখা গেলো। সেটি দেখে সে আনন্দে লাফিয়ে উঠল আর রানী Clytemnestra এর কাছে এই খবর দেয়ার জন্যে দৌড়ালো। আরগোসের বৃদ্ধরা এই নাটকে কোরাস এর ভূমিকা পালন করে। প্রহরী যখন দৌড়ে যাচ্ছিল সে সময় কোরাস এর বৃদ্ধ লোকেরা আরগোসের প্রাসাদে একত্রিত হয়েছিল আর সেই সকল পুরোনো ঘটনা বলল যে, গ্রিকের রাজা মেনেলাউস [menelaus] এর স্ত্রী, হেলেনকে কিভাবে ট্রয়ের প্রিন্স, প্যারিস চুরি করে নিয়ে যায় এবং কিভাবে গ্রীকরা দশ বছর তাদের সাথে যুদ্ধ করেছে।

কোরাসরা সে সময় রাজা আগামেমননের সেই ন্যাক্কারজনক ঘটনাও স্মরন করে অর্থাৎ আগামেমনন যাত্রাপথে যাতে সাগরে অনুকূল বায়ু লাভ করে, সে জন্যে তাদের দেবতা আর্টেমিস [Arthemis] এর জন্যে তাঁর কন্যা ইফিজিনিয়াকে উৎসর্গ করার জন্যে হত্যা করে। এ সময় রানী ক্লাইটেমনেস্ট্রা ধন্যবাদসূচক উৎসর্গ করে। কোরাস তাঁর কাছে জানতে চায় তাঁর উৎসর্গের কারন। তখন সে জানায় এক আলোক সঙ্কেতের ঝলকানীর মাধ্যমে সে জানতে পেরেছে গত রাতে ট্রয় নগরীর পতন ঘটেছে। বৃদ্ধরা শুনে খুশি হয় কিন্তু তাঁর কথা পরিপূর্নভাবে বিশ্বাস করতে পারে না। সংবাদ বাহক সেখানে এসে পৌছায় এবং এই খবরের সত্যতা প্রকাশ করে। তাদেরকে আরো বলে সেখানে তাদেরকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে কিন্তু তারা বিজয়ী হয়েছে।

রানী Clytemnestra তাকে রাজা আগামেমননের বহরের দিকে যেতে বললেন এবং তাকে খবর দিতে বললেন, রাজা আগামেমনন যেনো তাড়াতাড়ি ফিরে আসে। সে চলে যাওয়ার আগে বৃদ্ধরা রাজা আগামেমননের ভাই মেনেলাউসের খবর জানতে চায়। সে তাদের বলে রাজা মেনেলাউসের বহর [fleet] দেখা যায় নি কারন পথিমধ্যে একটা ভয়ঙ্কর সমূদ্র ঝড় ওঠে সে সময় অনেকেরই জাহাজ দিক বিদিক ছুটে যায়। ঝড়ের পরে মেনেলাউস সহ অনেককেই খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এবার কোরাসেরা হেলেনের সৌন্দর্যের ভয়ঙ্করত্ব নিয়ে গান গাইলো। অবশেষে আগামেমনন ফিরে এলো। রাজা প্রায়ামের [Priam] কন্যা কাসান্দ্রাকে [cassandra] নিয়ে তার রথ চড়ে আসে এবং সে কাসান্দ্রাকে দাসী হিসেবে গ্রহন করে। রানী Clytemnestra তাকে অভ্যর্থনা জানায় ও রাজাকে বলে তাঁর ভালোবাসা আগের মতই অটুট আছে। রাজা প্রাসাদে প্রবেশের জন্যে একটি বেগুনী কার্পেট বিছিয়ে দেওয়ার আদেশ করে। রাজা তাঁর প্রতি খুব ঠান্ডা আচরণ করে আর বলে এই কার্পেট দিয়ে হাটা তাঁর জন্যে এক প্রকার ভয়ঙ্কর অহংকার। সে রাজাকে এটা দিয়ে হেটে প্রাসাদে প্রবেশের জন্যে ক্রমাগত জোরাজুরি করতে থাকে। যাই হোক অবশেষে রাজা আগামেমনন প্রাসাদে প্রবেশ করলেন।

এ সময় কোরাসের বৃদ্ধরা এক প্রকার অমঙ্গলের পূর্ব লক্ষণ [foreboding] অনুধাবন করলেন। ক্লাইটেমনেস্ট্রা বেরিয়ে আসে যাতে কাসান্দ্রা ভিতরে যেতে পারে। ট্রয়ের এই রাজকন্যা এ সময় একেবারে চুপ হয়ে যায় আর রানী ক্লাইটেমনেস্ট্রা তাকে এই রকম নৈরাস্যজনক অবস্থায় ফেলে যায়। এ সময় কাসান্ড্রা কথা বলতে শুরু করে আর সে কিছু অসংলগ্ন ভবিষ্যৎবানী করে। সে আগামেমননের বাড়ির উপর অভিশাপ রয়েছে বলে মন্তব্য করে। কাসান্দ্রা  কোরাসদের বলে, তাদের রাজা খুব শিঘ্রই মারা যাবে এবং এরপর সেও মারা যাবে। এরপর আরো ভবিষ্যৎবানী করে সামনে একজন প্রতিশোধ গ্রহনকারী [avenger] আসবে। তাঁর কথা কেউ বিশ্বাস করে না। সে এ সময় ভাগ্যের কাছে নিজেকে সপে দেয় এবং ঘরে প্রবেশ করে।

এক সময় কোরাসদের ভয় বেড়ে যায়। পরের দৃশ্যে আগামেমননের ব্যাথায় চিৎকার শোনা যায়। কোরাসের দল এ সময় কি করবে তা নিয়ে এক প্রকার দ্বন্দে পড়ে যায়। রানী ক্লাইটেমনেস্ট্রা দরজা খোলে। তাকে তাঁর স্বামীর মৃতদেহ ও কাসান্দ্রার মাঝে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সে তাদের বলে সে তাঁর কন্যা ইফিজিনিয়াকে হত্যার প্রতিশোধ নিয়েছে। এরপর সে তাঁর প্রেমিক আগামেমননের চাচাতো ভাই এজিসথাস এর সাথে যোগ দেয়। তারা দুজনে রাজ্যভার গ্রহন করে। কোরাসের বৃদ্ধরা বলাবলি করে আগামেমননের ছেলে অরেস্টিস [Orestes] তাঁর পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে আসবে।


1 Comments

Post a Comment

Previous Post Next Post